কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা
সূচিপত্রঃ কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা
- কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা
- থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
- থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
- থানকুনি পাতা খাওয়ার ঔষধি গুণ
- শেষ কথা
কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা
শরীরকে বিভিন্ন দিক দিয়ে সুস্থ রাখতে থানকুনি পাতার জুরি মেলা ভার। এই পাতার রস প্রত্যেকদিন খেতে পারলে কোন চিন্তাই থাকবে না। তবে শুধুমাত্র এটা আমাদের দেশেই নয়, খ্রিস্টপূর্ব ১৭ শতক থেকেই জাভা, আফ্রিকা, সুমাত্রা তেও এই পাতা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এই পাতা বাটা অনেক উপকারী।
এছাড়াও শীতের মৌসুমে এই পাতা সুস্থ থাকতে খেতেই হবে। এত জোর দিয়ে কেন বলছি? এর অনেকগুলো কারণ আছে। চলুন সেই সব কারণ গুলো সম্পর্কে জেনে আসি কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা।
ক্ষত নিরাময়েঃ ছোট বাচ্চারা হঠাৎ কোনোভাবে খেলতে গিয়ে চোট পেলে বা হাত কেটে গেলে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করার জন্য থানকুনি পাতার কোন জুড়ি নাই। কাটা জায়গায় থানকুনি পাতা বেটে লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যথা কমে যায়। এমনকি ক্ষতস্থানে সংক্রমনের আশঙ্কা তেমন থাকে না।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিন কোন কাজ করে
শরীরের রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকেঃ থ্রম্বোসিসের সমস্যা অনেকের থাকে। এছাড়াও অনেকের দেহেই বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণে রক্ত প্রবাহের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই থানকুনি পাতার রস করে খেলে তো বিশুদ্ধ থাকে। ফলে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যেতে থাকে। যার ফলে বিভিন্ন সমস্যার উপশম ঘটে। হাত পা ফুলে যাওয়া সহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
রক্ত জমাট বাঁধে নাঃ থানকুনি পাতার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে, যা দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরের রক্ত জমাট বাঁধতে দেয়া একদমই উচিত নয়। কেননা, এর ফলে কিডনি, হার্ট ও মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। অন্যান্য অঙ্গগুলো ও কাজ করা বন্ধ করে দেয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য এই বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হবে।
শরীরের ভেতর জ্বালাপোড়া কম করাঃ শরীরের ভেতর কোনো কারণে কোনো ধরনের ক্ষত হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। ক্লান্তি জ্বর এগুলো আসতে পারে। সেই সাথে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ গুলোর ক্ষতি হতে পারে। এমনকি পেশির ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া এগুলোও থাকতে পারে। থানকুনি পাতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে। যার ফলে জ্বালা যন্ত্রণা খুব তাড়াতাড়ি কমতে থাকে।
আলসারের নিরাময়ঃ থানকুনি পাতা পেটের যেকোন ধরনের অসুখের জন্য খুব ভালো। এই পাতার গুনেই আমাশয় থেকে আলসার সেরে যায়। আর থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের দেশে থানকুনি পাতা অনেক পরিচিত একটা ভেষজ উদ্ভিদ। সকল ধরনের ওষুধি গুনাগুন রয়েছে থানকুনি পাতাতে। বেশ কয়েকটা নাম রয়েছে থানকুনি পাতার। অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন নামে থানকুনি পাতা কে ডাকা হয়ে থাকে। থানকুনি পাতার উপকারিতা অনেক। সকল রোগের ওষুধ হচ্ছে থানকুনি পাতা। পেটের সমস্যা ছাড়াও থানকুনি পাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময় ওষুধ। থানকুনি পাতার উপকারিতা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
- থানকুনি পাতা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে থানকুনি পাতা সাহায্য করে।
- জ্বরের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
- ক্ষত সারাতে সাহায্য করে থাকে।
- পেটের সমস্যা দূর করে।
- শরীর থেকে টক্সিক উপাদান বের করতে থানকুনি পাতা সাহায্য করে থাকে।
- কাশি কমাতে থানকুনি পাতা বেশ উপকারী।
- আমাশয়ের সমস্যা দূর করে থাকে।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় থানকুনি পাতা দারুন উপকারি।
থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম
শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় থানকুনি পাতা অনেক উপকারী। জ্বর ঠান্ডা থেকে শুরু করে, চুল পড়া, পেট ব্যথা সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে থানকুনি পাতা অনেক রক্ষা করে থাকেন। কিন্তু এই থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আপনাদের সাথে আজকে আমরা থানকুনি পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানাবো।
- থানকুনি পাতা রস করে খেতে পারবেন।
- বিভিন্ন ধরনের ঔষুধি গুনাগুন রয়েছে থানকুনি পাতায়। যা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। থানকুনি পাতা বিভিন্ন ধরনের উপায়ে খেতে পারবেন। তাই থানকুনি পাতা খাওয়ার আগে প্রথমে থানকুনি পাতা কে পরিষ্কার করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে কিংবা বেটে আপনি খেতে পারবেন।
- ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে থানকুনি পাতা খেতে পারবেন।
- পানির সাথে থানকুনি পাতা কে ছোট ছোট করে কেটে খেতে পারবেন।
- ভাতের সাথে থানকুনি পাতা কে ভর্তা করে খেতে পারবেন।
- থানকুনি পাতা বেটে পিয়াজু কিংবা বড়া করেও খেতে পারবেন।
থানকুনি পাতা খাওয়ার ঔষধি গুণ
উপরের উল্লেখিত তথ্যগুলো যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে হয়তো কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা সে বিষয়ে জেনেছেন। কেননা ইতো পূর্বে আমরা কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন থানকুনি পাতা খাওয়ার ঔষধি গুণ সম্পর্কে আলোচনা করব।
ফুসফুসের সংক্রমণ রোধ করেঃ থানকুনি পাতায়ে রয়েছে পুষ্টি উপাদান যা কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। যদি আপনার ফুসফুসের কোন ধরনের সমস্যা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি গরম পানির সাথে থানকুনি পাতার রস মিশ্রিত করে কিছুদিন নিয়মিত খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুনঃ পেয়ারা পাতার ২৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
নিদ্রাহীনতা দূর করেঃ থানকুনি পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে নিদ্রাহীনতা দূর করে থাকে। যদি আপনার নিদ্রাহীনতা বা ইনসোমনিয়ার সমস্যা থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত থানকুনি পাতার চা এবং থানকুনি পাতার সালাত খেতে পারেন। কিছুদিন নিয়ম করে খেলে নিদ্রাহীনতার সমস্যা আশা করি দূর হবে।
মুখের সংক্রমণ দূর করাঃ যদি আপনার মুখে কোন ধরনের সংক্রমণ থেকে থাকে কিংবা মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হয় সেক্ষেত্রে আপনি ধানকুনি পাতার রস দিয়ে নিয়মিত গড়গড়া করলে উপকৃত হবেন।
মাথা ব্যাথা দূর করাঃ থানকুনি পাতার রস মাথাব্যথা দূর করার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। গরম পানির সাথে নিয়মিত থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে মাথা ব্যথা দূর হবে।
ব্যথা নিরাময় করাঃ শরীরের যেকোনো ব্যথা দূর করবার জন্য থানকুনি পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। কেননা, যে কোন ব্যথাযুক্ত স্থানে থানকুনি পাতার রস লাগালে সকল ধরনের ব্যথা দূর হয়ে যায়। তাই শরীরের কোন ধরনের ব্যথা দূর করতে থানকুনি পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।
শেষ কথাঃ কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা
কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। থানকুনি পাতা কেন খাবেন সে সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আজ আর নয়, কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই কীভাবে ও কেন খাবেন থানকুনি পাতা সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url