শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন
সূচিপত্রঃ শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন
- শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন
- শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সবজি
- শীতে ত্বক সুস্থ রাখতে যা খাবেন
- শীতের সময় যে খাবারগুলো পরিহার করবেন
- শেষ কথা
শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন
শীতকালে মানুষ কিভাবে সুস্থ থাকতে পারবে সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে থাকে। সেজন্য আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি। এ আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন সে সকল বিষয়ে। কেননা শীতকালে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। যেগুলো খেলে শরীর সুস্থ থাকবে সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
পানিঃ শীতের সময় জলবায়ু শুষ্ক ও রুক্ষ হবার কারণে আমাদের ত্বক
ফাটতে শুরু করে। সেজন্য ত্বক ভালো রাখার জন্য আমাদের প্রচুর পরিমাণে পানি পান
করতে হবে। কেননা ডিহাইড্রেশন ও ত্বকের শুষ্কতা থেকে পানি আমাদের রক্ষা করে।
দৈনিক কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় লিটার পানি পান করতে হবে।
ভেষজ চাঃ ভেষজ চা পানীয় হিসেবে পান করতে পারেন। এমন বিভিন্ন ধরনের চা আছে যা আমাদেরকে শীতকালে সুস্থ রাখার জন্য সাহায্য করবে। লেবু ও ক্যামোমিলের মতো ভেষজ চা আমাদের স্নায়ুকে শান্ত রাখে এবং শরীরকে শিথিল রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে হতাশা ও উদ্বেগ কমে যায়। ঘুম ভালো হয়।
আরো পড়ুনঃ তানিশা নামের অর্থ কি - তানিশা নামের আরবি অর্থ কি
দুধঃ ভিটামিন বি ৬ এর অন্যতম ভালো উৎস হচ্ছে দুধ। তরল দুধ খেতে পারেন কিংবা প্রত্যেক দিনের নাস্তার সাথে ও যোগ করতে পারেন। দুধের সাথে ওটস বা কর্নফ্লেক্স মিশিয়ে খেলেও ভালো লাগে।
সাইট্রাস ফলঃ কমলা এবং মোসাম্বির মত সাইট্রাস ফলে ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। শরীরের রোগ দমন তন্ত্র কে ভিটামিন সি সাহায্য করে থাকে। প্রত্যেক দিন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ৭৫ মিলিগ্রাম ও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এর জন্য ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা উচিত।
ফাইবার যুক্ত খাবারঃ শীতকালে ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেতে
হবে। ওটস, আপেল ও বাদাম হচ্ছে ফাইবার যুক্ত খাবার। এগুলো শরীরের ওজন এবং
কোলেস্টরলের মাত্রা কম করে থাকে। ডায়াবেটিস রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে
থাকে। বয়স্ক মানুষদের জন্য এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সবজি
এতক্ষণ আমরা শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন আমরা শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সবজি সম্পর্কে আলোচনা করব।
মটরশুটিঃ শীতের সময় সহজলভ্য সবজি হচ্ছে মটরশুটি। মটরশুটিতে ও
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ৬ থাকে। এই সবজি খেলে আরো অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।
সালাদের সাথে এটা রাখতে পারেন। আলু কিংবা গাজরের সাথে ভেজেও এটা পরিবেশন করা
যেতে পারে।
মাছ ও শিমঃ শীতের সময় বেশি বেশি মাছ খেতে হবে। আমিষের চাহিদা
মেটানোর জন্য প্রত্যেকদিন দুই বেলা মাছ খেতে হবে। খাবারের সপ্তাহে অন্তত দুই
দিন সামগ্রিক মাছ রাখতে হবে। এছাড়াও মাছের সাথে শিম যুক্ত করে খেতে হবে। শিম
মাছের ঝোলের সাথে মানিয়ে যায়।
কলাঃ ওজন কমানোর চেষ্টা করলে প্রত্যেকদিন একটা করে কলা খাওয়ার
অভ্যাস করতে হবে। ভিটামিন বি ৬ এর পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও
ফাইবার থাকে কলাতে। সেজন্য শীতের সময় কলা একটা উপকারী খাবার হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ মুলতানি মাটির উপকারিতা
মুরগির কলিজাঃ অনেকেই মুরগির কলিজা খেতে ভালোবাসেন। শীতের সময় আপনার জন্য এই খাবার আরো বেশি উপকারী হবে। এতে ভিটামিন বি ৬ ছাড়া ও প্রচুর পরিমাণে ফলেট এবং আয়রন রয়েছে।
ধনেপাতাঃ এই ভেষজ উদ্ভিদটি রান্নাঘরের অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য উপাদান।
ধনেপাতার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম, একাধিক খনিজ লবণ ইত্যাদি। তাই এই ভেষজ উদ্ভিদ শরীরের রোগ
প্রতিরোধক ক্ষমতা মজবুত করে থাকে।
শীতে ত্বক সুস্থ রাখতে যা খাবেন
আমরা এখন ত্বক সুস্থ রাখার জন্য যে খাবারগুলো খাওয়া প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে
আলোচনা করব। শীতকালে ত্বক বিবর্ণ, রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। শীত কালে ত্বক
সতেজ ও সুস্থ রাখার জন্য খাদ্যাভ্যাসে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। চলুন তাহলে
জেনে নেই শীতে ত্বক সুস্থ রাখতে যা খাবেন সেগুলো বিষয়ে।
-
প্রত্যেকদিনের খাবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে পানি। আমাদের শরীর
এবং ত্বকের হাইড্রেশনের প্রধান উৎস হচ্ছে পানি। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি
পান করলে ত্বক নরম, মসৃণ ও কোমল থাকে।
-
স্যামন মাছ, আখরোট ও ম্যাকরেল মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
পাওয়া যায়। যা আমাদের ত্বককে পুষ্ট রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- রাজার রসালো এবং সতেজ সাইট্রাস বা টক জাতীয় ফল যেমন কমলা, আঙ্গুর ও মালটা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। শীতের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলগুলো সুপার ফুড হতে পারে। এগুলোর কিছু সাধারণ সুবিধা হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ফাইবার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- বাজারে শীতের মৌসুমে মিষ্টি আলু পাওয়া যায়। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে মিষ্টি আলুতে। এতে থাকা উচ্চ বিটা ক্যারোটিন ত্বককে শুধু পুষ্টি দেয় না, তোকে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে তুলতে সাহায্য করে। মিষ্টি আলুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
শীতের সময় যে খাবারগুলো পরিহার করবেন
আমরা এখন সুস্থ ত্বকের জন্য যে খাবারগুলো পরিহার করা উচিত সেগুলো সম্পর্কে
জানব।
- মিষ্টি খাবার বা অতিরিক্ত চিনি দেয়া খাবার শরীরের মেদ বাড়ানোর সাথে সাথে ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ করে তোলে। যার ফলে চোখের কোনায় ও কপালে বলি লেখা দেখা দিতে পারে।
-
অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে মুখে ফোলা দেখা দিতে পারে। থুতনির নিচে মেদ বেড়ে
যেতে পারে। প্রত্যেকদিন ৫০০ মিলিগ্রাম এর বেশি লবণ খাওয়ার ফলে চোখের কোল
ফুলে যেতে পারে। হলে মুখ ফোলা ফোলা দেখাতে পারে।
- দুগ্ধ জাত খাবার অতিরিক্ত পরিমাণ খেলেও চোখের কোন ফুলে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। থুতনির নিচে মেদ বাড়তে পারে। এছাড়া ও ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা দেখা দিতে পারে যা ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
- ত্বকের প্রকৃতি বদলে যেতে পারে ব্লুটেন সমৃদ্ধ খাবারদাবার অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে। গালে ও কপালে ব্রণ ফুসকুড়ি দেখা দিয়ে থাকে।
- মদ্যপান বা অ্যালকোহলের ফলে ত্বকে বলি রেখা দেখা দিয়ে থাকে। মুখ ও চোখের ফোলা ভাব বাড়তে পারে।
শেষ কথাঃ শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন
শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
আজ আর নয়, শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই শীতকালে সুস্থ থাকতে যা খাবেন সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url